সাঁওতাল সমাজ ও হেয়ালি (কুদুম):
হে য়ালির সাহিত্য মূল্যে অত্যাধিক। যুগ যুগ ধরে এগুলি সাঁওতাল সমাজ জীবনকে প্রভাবিত করেছে । কর্ম'ক্লান্ত জীবনে যা গিয়েছে প্রেরণা, মনে দিয়েছে আনন্দ । কত বিচিত্র বিষয়বস্তু, যে হেয়ালির উপকরণরূপে ব্যবহৃত হয়েছে, তার হিসাব নেই। সমাজের ছোট বড় সবাই তাদের নিজস্ব রুচি, ভাবনা ও পরিবেশকে এগুলি মধ্যে জন্মাবধি পেয়ে এসেছে । হেয়ালির উত্তর দেওয়ার রীতি-রেওয়াজ একট, গভীর- ভাবে লক্ষ্য করলে সাঁওতাল সমাজের একটা নতুন রূপে চোখে পড়ে, যা সচরাচর অন্য সমাজে দেখা যায় না ৷ এ রকম রীতি একটা সুনিয়ন্ত্রিত সমাজেরই ছাপ বহন করেছে । সেটা হল—কেউ যদি হে য়ালির উত্তর দিতে না পারে, তবে সে ‘পারছি না' কিংবা 'পারলাম না' কথাটি বলে না। সন্দের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী সে প্রশ্নকারীর কাছে নতি স্বীকার করে নেয়। সে বলে— অর্থাৎ—
“গড় মা ঠাঃ ঠঃ,
অকা বিরতেম বলা ?” (বলনা )
'বসত বাড়ীর আওয়াজ শোনা যায়,
কোন বনে তুমি প্রবেশ করবে ?”
এক অতি
এভাবে সে প্রশ্নকারীকে উত্তরটি বলে দেওয়ার জন্য আহ্বান করে । প্রশ্নকারী তখন নিকটবর্ত্তী কোন জঙ্গলের নাম বলে তার সম্মতি জানায়। উত্তরদাতা তখন আত্মসমর্পণ করে মান-দক্ষিণা দেওয়ার জন্য বলে-অর্থাৎ-
“লটা হাড়,প, বাটি হাড় প
দেলাং গ কুরীতে গিতি
সেতাঃ জড়া বদা খেটেই ঞ।”
“ঘটি বাটি উল্টে রাখলাম,
এস তবে ঘরে যাই,
সকালবেলা আমি জোড়া পাঁঠা দিব।”
কোন কোন অঞ্চলে এ কথাটি একট, আলাদাভাবেও বলা হয়, তবে উদ্দেশ্য এক যেমন—
‘সেতাঃরে বেরেৎকাতে,
থারিবাটি গাসাও কাতে
গলা বদাঞ খেটেঃ ।'
অর্থাৎ—
‘সকালবেলা উঠে,
থালাবাটি পরিষ্কার করে
লাল রঙের পাঁঠা দিব ।
প্রশ্নকারী তখন হেয়ালির উত্তর বলে দিয়ে সেটা আবার ব্যাখ্যা করে দেন। অনেক হেয়ালির আড়ালে জনম্র, তিম লক কাহিনীও থাকে । হেয়ালি ব্যাখ্যা করার সময় সেটি পরিবেষণ করা হয় । কাঁকড়ার পা সম্পর্কে— হে য়ালি ব্যাখ্যা করার সময় একটা চমৎকার কাহিনী শোনা যায়। সেটি এখানে বলছি : এক রাখাল ছেলে গর্, চরাতে গিয়ে একটি গর্ হারিয়েছিল। মনিব তা জানতে পেরে ভীষণ রেগে রাখাল ছেলেটিকে গর, খাঁজতে পাঠাল। রাখাল ছেলেটি তখন খুঁজতে বের হল । হাতে লাঠি, বগলে ছাতা, সারা বন খোঁজাখুঁজি করে ক্লান্ত হয়ে সে এক খালের ধারে হাজির হল। সারাদিন কিছু খায়নি। পেটে আগুন জ্বলছে । কি আর করবে ? তাই সে কয়েকটি কাঁকড়া ধরে খালের ধারে পাড়িয়ে খেল। তারপর ছাতাটিকে খোলা অবস্থায় সেখানে পাতে রেখে আবার গর্, খং গতে বের হল। এদিকে এক বাঘ দূরে থেকে সব কিছ, লক্ষ্য করছিল। কিন্তু ছেলেটির কাছে লাঠি ও ছাতা থাকায় আক্রমণ করতে সাহস করেনি। বাঘটি সেখানে এসে ছাতাটিকে জিজ্ঞাসা করল – এই করল—এই এক পা-ওয়ালা, দ ু'পা-ওয়ালা কোথায় গেল ?
ছাতা উত্তর দিল—'দশ পা-ওয়ালাদের খেয়ে এইমাত্র সে চার পা-ওয়ালাকে খাঁজতে গেল' ।
এ কথা শুনে বাঘ ভাবল, লোকটি যখন দশ পা-ওয়ালা - দের খেয়ে চার পা-ওয়ালাদের খাঁজতে বেরিয়েছে তাহলে বোধ হয় আমারই খোঁজ করছে। আমার ও তো চার পা আছে । আর এখানে থাকা চলবে না । বাঘ তখনই সেখান থেকে পালাল । কাহিনীটি যেমন চমৎকার, তেমনি আবার এর মধ্য দিয়ে বহ, কিছু, জানতে পারা যায়। বিশেষ করে গল্পটিতে জলচরদের সম্পর্কে বাঘের অজ্ঞতা এবং এ অজ্ঞতার জন্য ভুল হয়, ঠকতে হয় তা তুলে ধরা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কথার মারপ্যাচে কিভাবে প্রাণরক্ষা পায় কিংবা বিপদম,ক্ত হওয়া যায়, তাও তুলে ধরা হয়েছে ।
সাঁওতালী হোয়ালির বিষয়বস্তু বিচার-বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শ,ধ,মাত্র ঐ ভাষাভাষী জনজীবনকে জানা যাবে ভাবলে ভুল করা হবে। স্মরণ রাখতে হবে, এ সঙ্গে সঙ্গে ঐ অঞ্চলের বহ, কিছ, বিশেষ করে লোকজীবনের মূমূলসত্তা যে কৃষিসভ্যতা তার রূপেটুকু ধরা যাবে। বাংলার কৃষিকেন্দ্রিক জনগোষ্ঠীর মূল বৈশিষ্ট্য জানা যাবে, সমাজতত্ত্বের দিক থেকে তা কম মূল্যবান নয় !
এখানে একটা কথা বলি। হেয়ালির বিষয়বস্তু সব সময়েই বাস্তব ও প্রত্যক্ষ হয়ে থাকে। নিছক কল্পনাজাত বিষয় নিয়ে হেয়ালি তৈরি হয়নি এবং তা সম্ভব নয় । দৃষ্টি গ্রাহ্য কতুই মাত্র মানুষের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি করতে পারে, তবে যে সব বস্তুর উল্লেখযোগ্য কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে সেই সব বস্তুই হে য়ালির উপজীব্য হয়ে থাকে। দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি অভিজ্ঞতার ওপর সেগুলিই মনের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি করে এমনি ধরণের বস্তু বৈশিষ্ট্যগগুলির একত্র সম্মিলন ঘটিয়ে সাধারণতঃ হেয়ালি তৈরি হয়। প্রকৃতি জগৎ বিষয়ক একটি হেয়ালিই এখানে উল্লেখ করি—
অর্থাৎ—
“চালাঃ জখাঃ ইঞ ঞেলকেদা খাঁজাড়ি
আর রওয়াড় জখাঃ ইঞ ঞেলকেদেয়া বিঞ।”
যাওয়ার সময় ছিল মাড়ি
ফেরার সময় সাপ হয়েছে দেখি ।
সজনে গাছ সাঁওতালদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গর্ত্বে-পূর্ণে স্থান অধিকার করে আছে। এ গাছ সারা বছর ধরে সবজির সংস্থান করে থাকে। এর পাতা, ফুল ও ডাঁটা তাদের প্রিয় সবজি। সজনে ফুলের ফটে ওঠা এবং পরে ডাঁটায় পরিণত হওয়ার মধ্যে যে অভিনবত্ব দেখা যায়, তা বিস্ময়ের খোরাক সৃষ্টি করে বৈকি? তাই বিষয়টিকে তারা ঐভাবেই হে'য়ালিতে উপস্থাপন করেছে ।
আর একটি হেয়ালি শুনলেই ঘাবড়ে যেতে হয়—
অর্থাৎ—
'এঙ্গাত খান জাহারায়
হপনেরাত খান আতাংআয় ।”
'মা প্রণাম করে
মেয়ে গ্রহণ করে।'
এখানে যে চিত্রটি তুলে ধরা হল, তা প্রথাসিদ্ধ আচরণের বিপরীত চিত্র। শুনলে সত্যিই থতমত খাওয়ার মত অবস্থা হয়। হেয়ালিটির উত্তর হল- কলসী ও ঘটি। কলসী ও ঘটি দেখতে একই রকম, আকারে শুধু বড় ও ছোট । কলসীকে নিম্নমুখী করে জল গড়াতে হয় সেই জল ঘটিতে ধরা হয় । তাই এরকম হে'য়ালি আশ্চৰ্য্য নিপানতার সঙ্গে তৈরি হয়েছে। উত্তরটা জানতে পারলে স্বস্তি ও আনন্দ দুইই পাওয়া যায় । আর একটা মজার হেয়ালি-
অর্থাৎ—
“টিপ টাপরে টিপ টাপ ঞিদী চেদাঃ ঞরঃ ?
আংকুড়ারে বাংকুড়া
ঞিদা চেদাঃ চালাঃ ?”
‘টিপ টাপ টিপ টাপ
রাতে কেন পড় ?
আঁকা বাঁকা আঁকা বাঁকা
রাতে কেন হাঁট ?'
রাতের বেলা সাপ ঘোরাঘুরি করছে।
গাছের ডাল থেকে
মহয়া ফলে পড়তে দেখে খোঁটা দিয়ে বলল,
রাতের বেলা পড়ছিস কেন?
তাই শানে মহয়া ফলেও শেয়ালকে যোগ্য উত্তর দিয়ে বলল, তুমিই বা রাতে ঘুরে বেড়াচ্ছ কেন ?
আজকের আধুনিক শিক্ষা যতই আমাদের নতুনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ততই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের পরোনো দিনের সমস্ত চিহ্ন। আমাদের পরানো ধ্যান-ধারণা উলট পালট হয়ে যাচ্ছে, আমাদের জীবন আজ অন্য দিকে মোড় নিয়েছে। ফলে, আমরা হারাতে বসেছি আমাদের পরানো ঐতিহ্যের একটা দিক। পরানো সমাজের ছবি আধুনিক সমাজ আস্তে আস্তে - মছে ফেলেছে। এ পরিবর্ত নের ঢেউ আজ প্রতিটি সমাজেই দেখা দিয়েছে । এ থেকে সাঁওতাল সমাজও বাদ পড়েনি । আধুনিকতার ধাক্কায় তাদের রীতি-নীতি, চাল-চলন, আচার- ব্যবহার পাল্টে যাচ্ছে। তাই, এই সব হেয়ালির প্রয়োজনও হয়তো ফুরিয়ে এসেছে । কিন্তু একদিন আমাদের পূর্ব- পরষেরা এই সব হেয়ালি দিয়েই সান্ধ্য অবসরটুকু উপভোগ্য করে তুলত । সমাজের প্রয়োজনেই এগুলি তারা রচনা করেছিল । বলতে বাধা নেই, এগুলির পেছনে ছিল সমাজ ও জনমনের সক্রিয় ভ‚মিকা। এগগুলি খাটিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ না করলে লোকজীবনের ছবি ধরা পড়ে না, একটা জাতির বিচিত্র রীতি-রেওয়াজ, সমাজতত্ত্ব, জীবনতত্ত্ব জানতে পারা যায় না । দঃখের বিষয়, আজ লোকচক্ষুর অন্তরালে অনাদরে ও অবহেলায় এগগুলি ধ্বংস হচ্ছে। তাই যথাযথভাবে এগলি लोक সংগ্রহ করা একান্তই প্রয়োজন। এই মূল্যবান লোকসাহিত্য যথা সময়ে সংগৃহীত না হলে প্রাচীন ঐতিহ্যের একটা মাল্যবান সম্পদ লপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা। মানব সভ্যতা-সংস্কৃতি সম্বন্ধে কিছু না কিছু, জানতে কে না চায় ? আমাদের বিস্মৃত অতীতকে জানতে অতীতের নিদর্শন দিয়েই জানতে হবে। মানষের কর্ম‘কীর্তি, আলাপ- অভিলাষকে পূর্ণ ভবে হৃদয়ঙ্গম করতে না পারলে সংস্কৃতিকে বোঝা যায় না । এগুলি পর্যালোচনাই তো সংস্কৃতি বিচারের প্রথম সোপান । সাঁওতালী হেয়ালির উপর এই সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে সাঁওতাল সমাজের সংস্কৃতির ধারা ও বৈশিষ্ট্য সামান্য তুলে ধরা হল । যেটুকু তুলে ধরা হল সেটুকু যদি সাঁওতাল সমাজ ও সংস্কৃতিকে চেনা ও জানার ব্যাপারে আমাদের অনুসন্ধিৎসা বাড়াতে সক্ষম হয়, তাহলে আমার পরিশ্রম সার্থক । এ কথা ঠিক, প্রাক-স্বাধীনতা যুগে পর্য ন্ত সাঁওতাল তথা আদিবাসী সমাজ তৎকালীন বৃটিশ সরকারের বিভেদ নীতির ফলে বৃহত্তর ভারতীয় সমাজ থেকে প্রায় একরকম বিচ্ছিন্নভাবে ছিল। কিন্তু আজ আর তারা বিচ্ছিন্ন নয় ৷ তারাও বৃহত্তর ভারতীয় সমাজের এক অংশ। তাদের কথা আজ অনেকেই জানতে চায় । কারণ তাদের সংস্কৃতি ভারতবর্ষের মল ইতিহাসের লৌকিক সংস্কৃতির এক উজ্জল প্রবাহ । আজকের ন,তাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও সমাজ-বিজ্ঞানীরা তাই মনে করেন। ইদানিং কালে আবার জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সম্পর্কে আমরা খ,ব বেশি ভাবছি। জাতীয় সংহতি ও শক্তিশালী ভারতীয় সমাজ যখন আমাদের কাম্য, তখন আমাদের এই প্রতিবেশী সমাজের সংস্কৃতি ও চিন্তাধারা আরো গভীরভাবে জানা দরকার । বোঝা দরকার। যদি তাদের সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচিত হতে চেষ্টা না করি, তবে জাতীয় সংহতি সম্পর্কে কিছ, বলার অধিকার আমাদের নিশ্চয় নেই । সাঁওতালী হেয়ালিগুলো একদিকে যেমন আমাদের জাতীয় চেতনা ও জানবার আগ্রহকে জাগিয়ে তুলবে, অন্যদিকে তেমন শিক্ষাধারায় অন সন্ধান ও গবেষণার প্রেরণা আনবে । এমনি করেই লপ্তেপ্রায় এই সাহিত্যের মাধ্যমে সকলকে আপনার করে দরদ দিয়ে দেখবার সংযোগ পাওয়া যাবে। মানুষে মানুষের আত্মীয় হয়ে উঠবে ।
সাঁওতালী হেয়ালি সংগ্রহে যাঁদের সহযোগিতা পেয়েছি তাঁরা হলেন-
শ্রীসারিধরম হাঁসদা (কুমারদা ), মেদিনীপরে ; শ্রীতিলকা সরেন ( মোহনপরে ) মেদিনীপুরে ; শ্ৰীচাম্পাই বাস্কে (বাঁশকেট্যা), মেদিনীপুরে ; শ্রীজিয়াড়ঝারণা বেশরা (পাটাশোল) মেদিনীপুরে ; শ্রীঅমর সিং মহরম ( রানারানী ) মেদিনীপুর ; শ্রীনারায়ণচন্দ্র মাণ্ডি (লোহামারিয়া ), বাঁকুড়া ; শ্রীযামিনীরঞ্জন সরেন ( ভাদলী, বাঁকুড়া ; শ্রীগোপালচন্দ্র হাঁসদা । রতনপুর ), বাঁকুড়া ; শ্রীলদা হেম্ভ্রম ( কুস মডুংরি ), বাঁকুড়া ; শ্রীগোপীনাথ মাণ্ডি (শিয়াকুলডোবা), বাঁকুড়া ; শ্রীশৈলেন্দ্রনাথ টুডু (খাড়ঝোর) বাঁকুড়া ; শ্রীমহাদেব হাঁসদা (কায়রা, পরলিয়া ; শ্রীবাব, নাথ হাঁসদা ( কালীপ র ), পুরুলিয়া ; শ্রীফকিরচন্দ্র মহরম ( পিড়ললিয়া, পরে লিয়া ; শ্রীনরেশ চন্দ্র সরেন (কুরুলিয়া ) রাইলাপাড়া), মালদহ ; শ্রী আন্দ্রেয়াস মহরম, শ্রীরবীন টুডু বিল্বগ্রাম চাঁপিদীঘি সবাইয়ের কাছে আমি বিনীত চিত্তে কৃতজ্ঞ ।
মিটেন টিপটিপি চে'ড়ে,
চুপিতেগে সিবিল তারা।
২। কুন্দম কুড়ি কুড়িৎ
চটরে গিদি তুর্কী লঃ কান,
ফেজুরে হাড়াম বড় হিকিন রপড়কান।
-হ কী আর কুলকা
১। চিল চিল হৈয়ালি,
এক যে টুনটুনি পাখি,
লেজটুকু তার ভারী মিষ্টি।
৩। কুদম কুড়িৎ কুড়িৎ,
হাড়াম সেতায় ভোঃ লেদা,-
ঝানটি লাড়াও এন
৩। চিল চিল হেয়ালি,
বড়ো কুকুর ডাক দিল,
মাচ টা নড়ে উঠল ।
-একটিকে ধামসা ও নাচের মেয়েরা
৪। কুদম কুংড়িৎ কুংড়িৎ,
হর হরতে হেন্দে বারাহি,
মা ঞমপে ?
—সনম মঃচ
৪। চিল চিল হেয়ালি,
রাস্তাঘাটে কালো দড়ি,
বল তো দেখি কি ?
৫। কুদমে কুঁড়িৎ কুঁড়িৎ,
মামো ডেকে থরথপ ।
মাসে ঞমপে ?
- হাঁডি চালা
৫। চিল চিল হেঁয়ালি,
মামার কোমর থক থকে,
বল তো দেখি কি ?
৬। চিল চিল হেয়ালি,
এক যে বাড়ি ঠান,
সকাল হলেই তারে করাও স্নান।
- চুলহী
৭। কুদম কুড়িৎ কুড়িৎ,
রাপাৎ অড়াঃরে,
ক’ক. কো তুপ দা ভাদ,ভাদ, ।
—খাঁজাড়ি আতা
৭। চিল চিল হেয়ালি,
বকের ঝাঁক ভাঙ্গা ঘরে,
ঝ টোপাটি ঝগড়া করে ।
৮। কুদম কুড়িৎ কংড়িৎ,
আলে ছাট কারে,
মিৎ ঞিদাঁতে তালে দারে আকান ।
৮। চিল চিল হেয়ালি,
আমাদের উঠানেতে,
তালগাছ হয় এক রাতে ।
৯। কুদম কাঁড়ি কাঁড়িৎ,
মিটাং নাহেলতেকো সিয়া,
বার্য়া আঁড়গম তেকো আঁড়গমা।
—দীতীওনি
৯। চিল চিল হেয়ালি,
একটি লাঙ্গল হাতে ধরে,
দ’মই দিয়ে সমান করে ।
—দাঁতন
১০। চিল চিল হেয়ালি,
গরটি বসে আছে,
জোড়াটি চরে যাচ্ছে ।
—কুমড়ো ও কুমড়ো ডগা
কুদম কাঁড়ি কাঁড়িৎ,
ডাংরি দয় বরম আকান,
জড়া দয় অতিঞ কান ।
—ক হডা আর নাড়ি
১১। কুদম কাঁড়ি কাঁড়িৎ,
মিটাং এসেল ঝড়হি,
১১। চিল চিল হেঁয়ালি,
হেন্দে টুকুচ, এ দিপিলকাঃআ ।
—সস বিলি
এক যে ফর্সা ঝুড়ি, মাথায় তার কালো হাঁড়ি ।
— ভেলা ফল
১২। কুদম কাঁড়িৎ কড়িৎ,
১২। চিল চিল হেঁয়ালি,
গটা বির্ লঃ কানা,
মাহরোআঃ ঠেঙ্গা দ বাং লঃকানা ।
—হর
সমস্ত বন পড়ছে, রাখালের লাঠি বাদ পড়ছে ।
-রাস্তা
১৩। চিল চিল হেয়ালি,
বনের মাঝে মোটা বড়ো,
মরে ফাঁস পরে।
—গাটি পোকা ( তসর পোকা )
১৩। কুদ,ম কাঁড়িৎ কংড়িৎ,
তালা বিররে মিটাং গড়গ, হাড়ামে,
পাঁসি গজঃ কান ।
—লমাম
১৪। কদমে কুড়িৎ কুড়িৎ,
মিটাং টিপটিপি চে'ড়ে
মিৎ অড়াঃ এ জেলা ।
১৪। কদমে কুড়িৎ কুড়িৎ,
মিটাং টিপটিপি চে'ড়ে
মিৎ অড়াঃ এ জেলা ।
১৪। চিল চিল হেয়ালি,
এক
যে টুনটুনি পাখি,
মাংস করে ঘর ভর্তি—।
১৫। চিল চিল হেয়ালি,
পাথর গলে যায় ছড়লে,
জল
গলে না পড়লে ।
১৬। চিল চিল হেয়ালি,
ধিরিগাড়ি চাপানেখান তাবঃ আ,
দাঃ জরলেন খান বাং তাবঃ আ ।
—বিন,দি গানাঃ
১৬। কুপম কুoড়িৎ কুড়িৎ,
রাঙ্গি গাঁই আচুরিঞ চালাওলেনা,
গাডি গাই এ রঃগৎ কিদিঞা ।
---জান, ম
১৭। চিল চিল হেয়ালি,
ঝুলে পড়া লম্বা বাঁশ,
একেবারেই নেই গাঁট ।
১৭। কুদ,ম কুতড়িৎ কুড়িৎ,
হল
য় ল কুয় মারে,
গটিগে বানঃ'আ ৷
১৮। কুদ ম কুড়িৎ কুড়িৎ,
রাজরেন পাওরা,
রমকাতে কো আঁড়গোনা ।
সারজম জ
রাঙ্গি গাই ঘোরাতে গেলাম,
গাড়ি গাইয়ের তাড়া খেলাম ।
১৮। চিল চিল হেয়ালি,
রাজবাড়ির পায়রাগগুলি,
ভরে পড়ে নীচে নামে ।
১৯। চিল চিল হেয়ালি
গরম গরম ভরে চেষ্টা করে বের করে ।
১৯। কুদ ম কুতড়িৎ কুড়িৎ
লল সল ক খাঁড়া
চাপটা কাতেৎ ক উ,কা ।
—হোড়ো আর ভাবেন -হোড়ো আ
২০। চিল চিল হেয়ালি
একটা জন্তু উঠলে পরে
ধানভানার ‘আখায়নি’*লাঠিটি তুলে ধরে।
—কুকুরের লেজ
২০। কুদ,ম কুoড়িৎ কুড়িং
মিটাং হড় বেরেং আকানসে
আখায়নি ডাংএ গঃকাঃআ ।
– সেতা চুপি
---প্রদীপ
-মাকড়শার জাল
—কুল কাঁটা
-মাথার চুল
—শাল ফল
—ধান ও চিড়ে
২১। কুদম কংড়িৎ কংড়িৎ, এমাৎ মিয়াঞ,
আরহ ম কয়ঃ রওয়াড়িঞ কানা ?
—তহৎ ধিরি
২১। চিল চিল হোঁয়ালি, তোমাকেই তো দিলাম,
আবার তুমি ফিরে তাকাও ? — হোঁচট খাওয়া পাথর
২২। কুদম কুড়িৎ কংড়িৎ,
হর হরতে চালাঃ কানাঞ,
পোল্ড সিম ইঞ তাওয়া ইদিয়েকানাঞ ।
—সল চ
২২। চিল চিল হেঁয়ালি,
রাস্তায় রাস্তায় যাই,
সাদা মুরগি আছাড় দিই ।
—শিকনি
২৩। কুদম কাঁড়ি কাঁড়িৎ,
ঘটু অত রেকো চাষ আ,
আর হারতারেকো খারাইআ ।।
--থামাকুর
২৩। চিল চিল হেয়ালি,
ডাঙ্গা জমিতে চাষ যার,
চামড়ার উপর খামার তার ।
২৪। কদম কাঁড়ি কাঁড়িৎ,
রাকো বিররে হেন্দে ডাংরায় অতিজ্ঞা,
হয় ভাণ্ডো জখান দ দারেরের হাড় পকঃ আ
বহঃরেন স্যে
২৫। কদম কুঁড়িৎ কু৺ড়িৎ,
হায় চাঁদো বঙ্গা !
ডাণ্ডা খন গিদরীম জানাম হচঞ কানা
—জরা
২৬। কদম কুঁড়িৎ কুĞড়িৎ,
উদ্দন বিররে জেল ক সেন্দ্রাকওয়া,
পোল্ড ধিরিরে ক গঃচ, কওয়া।
—বহঃরেন স্যে
২৭। কুদম কুoড়িৎ কু৺ড়িৎ
অড়াঃ দ চালাওএনা দ ওয়ীর হরতে
ইঞ দঞ চালাঃআ অকা হরতে ?—জালরেন হাকু
২৮। বালায়া মিৎ গাডোরেকিন দড়প, আকান
বাকিন জপটেৎ আকান ।
—ডাংরী দেরে এ
২৯। কুদম কুঁড়িৎ কুঁড়িৎ,
সাদকাতেঞ কিরিঞকেদা,
কুডীম সেনরিঞ আকাকেদা ।
—সং ঝপা
২৮। চিল চিল হেঁয়ালি,
বেয়াইরা বসেছেন একটি পিংড়িতে
ছোঁয়াছ, য়ি তাদের নেই মোটেই।
২৯। চিল চিল হেঁয়ালি,
সখ করে কিনলাম,
পিছন দিকে ঝুলিয়ে রাখলাম ।
—গরুর শিং
—চুল বাঁধার গছি
৩০। কুদম কুঁড়িৎ কুংড়িৎ,
গেলবার, চান্দোরেন মিংটাং খাসি,
মিৎ কুটিয়ে জেললেদা ।
- রচ
৩০। চিল চিল হেয়ালি,
বারো মাসের এক খাসি,
এক কুটি মাংস তারি
—শাম ক
৩১।কুদম কুড়িৎ কুঁড়িৎ,
বাড়গে ঝাড়গে ডাঁহি-ডুংরি গটাগেকো চাষআ,
দাঃরে তাকো খীরাই।
-জাঁড়ি
৩১। চিল চিল হেয়ালি,
মাঠে ঘাটে চাষ যার,
জলাশয়ে খামার তার ।
— পাট
৩২।কুদদম কুঁড়িৎ কুঁড়িৎ,
সিঞ ঞিদাম লো,
গাড়া গাডাতে বাঁদকে টেডার ।
—ইচাঃ হাকো
৩২। চিল চিল হেয়ালি,
খালে-ডোবায় দিনে রাতে,
বিচ পাবন্দকে দেখি তাক করে ।
—চিংড়ি মাছ
৩৩ । কুন্দম কুড়িৎ কুড়িৎ,
লাঃচ, মেনাঃতায়া পটা দ বাং,
মচা মেনাঃ তায়া ডাটা দ বাং । – কাণ্ডা
৩৩। চিল চিল হেয়ালি,
পেট আছে নাড়িভংড়ি নেই,
মেখে আছে দাঁত নেই ।
—কলসী
কুদম কুংড়িৎ কুড়িৎ,
চালাঃ জখাঃ ইঞ ঞেলকেদা খাঁজীড়ি,
আর রওয়াড় জখাঃ ইঞ ঞেলকেদেয়া বিঞ।
—মনগা বাহা আর মনেগা সাটি
৩৪। চিল চিল হৈয়ালি,
যাওয়ার সময় ছিল মাড়ি,
ফেরার সময় সাপ হয়েছে দেখি ৷
—সজনে ফুল ও সজনে ডাঁটা
৩৫। কুদম কুঁড়িৎ কুড়িৎ,
মড়ে হড় দ কো কারহায়া,
আর ম'ড়ে হড় দ দারেকো অতায়া।
- নাঁকিজঃ
৩৫। চিল চিল হেঁয়ালি,
পাঁচ জনে নিড়ান দেয়,
আর পাঁচ জনে সব গাছ চেপে ধরে। —মাথা আঁচড়ানো
৩৬। কুদম কুড়িৎ কুড়িৎ,
মিটাং দারেরে,
বিন বাহাতেগে জঃ আ
এমন আজব গাছ দেখিনি কখন,
—লওয়া
বিনা ফুলে ফল হয় এ কেমন ?
—ডুমুর
৩৭। চিল চিল হেয়ালি,
ধিরি চাটানিরে কো সিয়োঃ আ
ড°ডহর রেকো কারহায়া ৷
—দাঁতীওনিঃক
৩৮। কুদম কুঁড়িৎ কুড়িং,
মিটাং দারেরে মিটেনগে বাহা,
আডি উতীর জঃ আ ।
৩৯। কুদম কড়িৎ কুড়িৎ,
মারাং হড় দয় জাহারা,
হ,ডিঞ হড় দয় আতাংআ ।
৪০। কুদম কুঁড়িৎ কুড়িৎ,
গাড়ারে তপা সই,
মাসে লাইপে চেৎ ? -দংড়ি হাকো
৪১। কুদম কুড়িৎ কুংড়িৎ
সাত শায় নাগা বাবাক,
চট সেৎ ক ইসিড় আকাদা । – তিল মিঞ, জ
৪১। চিল চিল হেয়ালি,
সাত'শ নাগা সাধ,
উপর দিকে দাঁত খিচিয়ে আছে।
— তিল